ইটভাটা মালিকদের সিন্ডিকেটে বেড়েছে ইটের দাম, প্রশাসনের নজর নেই

শাহীন মাহমুদ রাসেল :

কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে উঠা শতাধিক ইটভাটায় অবাধে পোঁড়ানো হচ্ছে পাহাড়ের মূল্যবান বনজ ও ওষুধি গাছ। এসব ভাটায় পাহাড়ের মাটি, ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি, কোন কোন ভাটা গণবসতিপূর্ণ এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এবং সরকারী জায়গা দখল করে নির্মানের অভিযোগ রয়েছে।

১৯৮৯ ও ২০০১ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন ১৭ নং অনুচ্ছেদের ৪ ও ৫ ধারায় আবাদি জমিতে কোনো ইটভাটা তৈরি করা যাবে না ও ১২০ ফুট চিমনি ব্যবহার করার বিধান এবং কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ এবং ঘনবসতিতে ইটভাটা নির্মান না করার আইন থাকলেও এখানকার ইটভাটাগুলো এর কোনটিই মানছেন না।

বরংচে এতোসব আইন অমান্য করে ভাটা মালিকরা পরিচালনা করছেন ইটভাটা। মালিকরা সিন্ডিকেট করে বাড়িয়ে দিয়েছেন ইটের মূল্য। গত বছর ইটভাটাগুলির প্রথম দিকের ইটের মূল্য ৪হাজার ৫শত টাকা এবং কংক্রিট ৫হাজার ৫শত টাকা নির্ধারিত হলেও এবার ইটের মূল্য ধরা হয়েছে সাড়ে ৭হাজার টাকা এবং কংক্রিট ৭হাজার ৫শত টাকা। অতিরিক্ত অর্থ আদায় ছাড়াও ভাটা মালিকেরা ছোট আকারের ইট তৈরী করে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারনা করে আসছে বলে অনেকে জানিয়েছেন।

বিএসটিআই সূত্রে জানা গেছে, নির্মান সামগ্রী ইট তৈরীর জন্য বিএসটিআই সঠিক পরিমাপ নির্ধারন করেছে প্রতিটির ইটের দৈর্ঘ্য২৪ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ১১দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ও উচ্চতা ৭ সেন্টিমিটার। কিন্তু কক্সবাজার জেলার অধিকাংশ ভাটাগুলির ইটের সাইজ ছোট হওয়ায় প্রয়োজনের চেয়ে বেশী ইট দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে ক্রেতাদের, ফলে দুদিক দিয়ে ঠকছে ক্রেতারা।

স্থানিয় ও জাতীয় দৈনিকে ইটভাটাগুলির নিয়মিত সংবাদ প্রকাশ হলেও রহস্য জনক কারণে বরাবরই নীবর থাকছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন। প্রতিবছর যৎসামান্য জরিমানা ছাড়া তেমন কোন প্রদক্ষেপ নিতে দেখা যায়না।
দাম বাড়ানোর ব্যাপারে কয়েকটি ভাটার ম্যানেজাররা জানান, মাটি ও লাকড়ির দাম বেশী হওয়ায় ইটের দামও বেড়েছে।

ক্রেতা আমিনুল হক ও এম এইচ মোরশেদ বলেন, অবৈধ ইটভাটার পাশাপাশি ভাঁটাগুলিতে নির্বিচারে চারা গাছ পোঁড়ানো হচ্ছে। ইটের সাইজ ছোট করে তৈরী করা হচ্ছে তারপরও দাম রাখা হচ্ছে বেশী। এ সুযোগে ইটভাটার মালিকগুলি রাতারাতি বিত্তশালী হয়ে উঠছে আর প্রতি বছর বাড়ছে নতুন নতুন ইটভাটা।

সদর ও রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজুর রহমান এবং লুৎফুর রহমান বলেন, ইটভাটার বেআইনি কাজ বন্ধে প্রশাসন সবসময় তৎপর। আইন অনুযায়ী কৃষি জমিতে, গণবসতিপূর্ণ এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্নে নতুন ইটভাটা তৈরীর অনুমতি নেই। যে কয়টি পুরনো আছে সেগুলোকে বিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।

আর এ সুযোগটি যদি কোন ভাটার মালিক অবৈধ ভাবে নিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গাছ পোড়ানো, ফসলি জমির মাটি ব্যবহার এবং সরকারী জায়গায় ইট ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তারা।