অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক সেবন শরীরের জন্য ক্ষতিকর!

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল (যেমনঃ এন্টিবায়োটিক, এন্টিফাংগাল) এটি শুধুমাত্র   প্রতিরোধী ক্ষুদ্র অণুজীবের (যেমনঃ ব্যাকটেরিয়া,ছত্রাক) বিস্তারকে হ্রাস করতে পারে শুধু   সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের মাধ্যমে।
 যার চিকিত্সার জন্য অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ওষুধ দরকার শুধুই সেসব ক্ষেত্রে ঐসব ঔষধ প্রয়োগ জরুরী কিন্তু  ভাইরাল ইনফেকশনগুলির জন্য  ঘন ঘন antimicrobial ওষুধের অপব্যবহার বন্ধ করা প্রয়োজন।
বর্তমানে আরেকটি জিনিস লক্ষ্য করা গেছে গবাদিপশু, হাস মুরগির, মৎস্য খামারে অযাচিতভাবে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব ঔষধ যেকোনভাবে মানবদেহে পৌঁছাচ্ছে      এন্টিবায়োটিক অকার্যকর হওয়ার এটি একটি অন্যতম কারন।
আবার অনেক সময় দেখা যাচ্ছে আমরা এন্টিবায়োটিক সেবন করার পর অবশিষ্ট গুলো ফেলে দিই।কিংবা হাসপাতাল, ফার্মেসীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধগুলো নষ্ট করার সময় খোলা মাঠে পুড়ে ফেলি। ফলশ্রুতিতে খোলা বাতাসে মুক্ত ব্যাকটেরিয়ার ঔষধের  সংস্পর্শেএসে রেসিটেন্স (অকার্যকর) হয়ে যাচ্ছে।
কখনো ভেবেছেন আপনার এসব ফেলে দেওয়া এন্টিবায়োটিক গুলো ক্ষতির কারণ হচ্ছে নাতো….! ইদানীংকালে রোগীদের অতিউৎসাহীতার কারনে সামান্য অসুখেও এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়েছে। অনেক সময় আমরা এন্টিবায়োটিকের কোর্স সম্পন্ন করি না।এর কারনে এন্টিবায়োটিক অকার্যকর হচ্ছে।
 তবে এভাবে চলতে থাকলে আমরা এন্টিবায়োটিক সংকটে পড়ব। আমাদের বর্তমান এন্টিবায়োটিক গুলো ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করবে না।এই এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াদের সংক্রমনকে মেডিকেলের ভাষায় সুপারবাগ বলা হয়।আধুনিক অনুজীব বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় চ্যালেন্জ এটি
সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা
যেমনঃ স্যানিটেশন, হাত ধোয়া, খাদ্য এবং পানি নিরাপত্তা বিধান , এবং টিকা। বিশ্বব্যাপী ঔষধ নিয়ন্ত্রনকারী সম্প্রদায় যেমনঃ WHO এবং CDC   এই প্রয়োজনীয় ওষুধগুলির ব্যবহার  আরও ভালভাবে পরিচালনা করতে পারে।
টিকা সহ কঠোর স্বাস্থ্যবিধি এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলি প্রতিরোধী ক্ষুদ্রগতির বিস্তারকে সীমাবদ্ধ করতে পারে এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের  অপব্যবহার ও অতিরিক্ত ব্যবহারকে হ্রাস করতে পারে।
কার্যকর পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলির মাধ্যমে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমতে পারে।
 এন্টিবায়োটিক অযাচিত ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ও সংক্রমন প্রতিরোধে  স্বাস্থ্য পেশাদাররা নিম্নোক্ত কাজ করতে পারেনঃ
১। সংক্রমন প্রতিরোধ ঃ প্রতিটি কাজের পুর্বে এবং পরে  হাত ধোঁয়া কমপক্ষে ২০সেকেন্ড(হ্যান্ড স্যানিটাইজার)৪০সেকেন্ড(সাবান পানি)  , রোগীর কাজে এবং হাসপাতালে কাজের ব্যবহারিক যন্ত্র, চিকিৎসক নার্সের কক্ষ,ড্রেসিং কক্ষ, অপারেশন থিয়েটার, রোগীর বিছানা, ওয়ার্ড  জীবাণুমুক্তকরন  নিশ্চিত করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করুন।
২।WHO বা   CDC কতৃক প্রদত্ত   মান নির্দেশিকা অনুযায়ী, যখন প্রয়োজন হয় কেবল তখনই এন্টিবায়োটিকগুলি নির্ধারণ করুন এবং বিতরণ করুন।
৩। প্রতিটি হাসপাতালে নজরদারী দলের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী সংক্রমণ রিপোর্ট তৈরি করুন।
৪।কীভাবে এন্টিবায়োটিক সঠিকভাবে গ্রহণ করবেন, এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধের এবং অপব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে আপনার রোগীদের সাথে কথা বলুন।
৫।সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্পর্কে আপনার রোগীদের সাথে কথা বলুন (উদাহরণস্বরূপ, টিকা, হাত ধোওয়া, নাক মুখ ঢেকে রাখা হাঁচি ও কাশি দেওয়ার সময়,নিরাপদ খাবার ও পানি পান করা,নিয়মিত কৃমিনাষক ঔষধ সেবন,শারীরিক পরিচ্ছন্নতা   )
√আসুন সচেতন হই, সংক্রমণ প্রতিরোধ করি  √এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমায়।
ছৈয়দ আহমদ তানশীর উদ্দিন
নার্সিং কর্মকর্তা ও
ডেপুটি ফোকাল পারসন
জেলা সদর হাসপাতাল সংক্রমন প্রতিরোধ কমিটি কক্সবাজার।